ঈশ্বরদীতে করোনা রোগী ক্রমাগতভাবে বাড়ছে ॥ রাশিয়ানসহ 958 জন আক্রান্ত,মৃত্যু-৭,মোবাইল অক্সিজেননসহ পৃথক হাসপাতাল দাবি

 


স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা মহামারি শুরু থেকে অদ্যবধি সোমবার পর্যন্ত  ঈশ্বরদী হাসপাতালে 6426 জনের করোনা পরীক্ষা করে 718 জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে।         সোমবারও  ঈশ্বরদী হাসপাতালে ৬৩ জনের করোনা পরীক্ষা করে ৩৬ জন করোনা পজিটিভ হয়েছেন।  গ্রীণসিটি এলাকার ডিএমএমআর মালিকুলার ল্যাবে 22 জন পরীক্ষা করে 9 জন পজিটিভ হয়েছে।     অন্যদিকে রুপপুর প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ান নাগরিকের মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছে ২৩১ জনের। স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালসহ বিভিন্নস্থানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যদিকে রুপপুর পরমাণু প্রকল্পে কর্মরত করোনায় আক্রান্ত রাশিযান নাগরিকদের মধ্যে ১৪৪ জন চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের মেডিকেল অ্যাডভাইজার (রাশিয়ান ডেস্ক) চিকিৎসক মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তিদের যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজনের শ্বাসকষ্ট ছিল এবং একজনের ফুসফুস ৭০ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছিল। তবে এখন সবার অবস্থা স্থিতিশীল। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪৬ জন রাশিয়ান নাগরিক রাজশাহীর সিডিএম হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে হাসপাতালের পরিচালক শামীমা চৌধুরী জানিয়েছেন। ঈশ্বরদীর নিউ গ্রিন সিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিকে ভর্তি ছিলেন ৩৫ জন। তাঁদের মধ্যে চারজন সুস্থ হয়ে গত রবিবার হাসপাতাল ছাড়েন। এখন ৩১ জন চিকিৎসাধীন বলে জানান হাসপাতালটির সমন্বয়ক চিকিৎসক সাইফুল আলম। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে ৬৭ জনকে। তাঁদের মধ্যে ঢাকা শ্যামলীর সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ৪৫ জন এবং বাড্ডায় এএমজেড হাসপাতালে ২২ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এএমজেড হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক রাশিদুল মজিদ চৌধুরী জানান, তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি রাশিয়ার ২২ নাগরিকের সবার অবস্থা স্থিতিশীল।

প্রকল্পের চিকিৎসক মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম জানান, সেখানে প্রায় ৩ হাজার ৬’শ রাশিয়ান কর্মী কাজ করেন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ১ হাজার এবং দ্বিতীয় ধাপে ৩’শ জনসহ মোট ১ হাজার ৩’শ জনকে রাশিয়ার তৈরি স্পুতনিক-ভি টিকা দেওয়া হয়েছে। যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১০ জন টিকা নিয়েছিলেন।

শুধু তাই নয়,বিভিন্ন পাড়া মহল্লার অনেক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে কাউকে জানতে না দিয়েই তাদের সুবিধামত ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিসার জন্য চলে গেছেন এবং যাচ্ছেন। আবার অনেকেই নিজ বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে কেউ কেউ ভাল হয়েছেন । এমনকি কেউ কেউ মুত্যু বরণ করলেও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণের বিষয়টি গোপন রাখছেন। এ অবস্থার কারণে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস বুকে পাকশী রেল হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসার হাসপাতাল হিসেবে ঘোষনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন। এমনকি কেউ কেউ একই মাধ্যমে  ঈশ্বরদী হাসপাতালকে শুধু মাত্র করোনা রোগিদের চিকিৎসার হাসপাতাল ঘোষনার দাবি তুলেছেন। সকল প্রকার প্রশাসনের কঠোরভাবে লক ডাউন মানার ব্যবস্থা করার চেষ্টার পরও অনেকেই ফেসবুক মাধ্যমে ইপিজেড ও পরমাণু প্রকল্পের শ্রমিকদের বিভিন্ন যানবাহে গাদাগাদি করে ভ্রমনের ভিডিও ও ছবি প্রচার করে লক ডাউন মানা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।

এদিকে  ঈশ্বরদীতে ক্রমাগতভাবে করোনা রোগির সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ঈশ^রদী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি ওয়ার্ডে ১২ টি বেডে করোনা রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন যা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। সীমিত জনবল দিয়েও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা রোগির সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এসব কারণে  ঈশ্বরদী হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে মোবাইল অক্সিজেন সরবরাহ ও জনবল বৃদ্ধি করা জরুরি হয়ে পড়েছে বলে হাসপাতালের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র দাবি করেছেন।#


No comments

Powered by Blogger.